হজ্জ্ব হল প্রতি বছর মক্কার উদ্দেশ্যে মুসলিমদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন সফর, যেটি হিজরী বছরের শেষ মাস জিলহজ্জ্ব মাসে অনুষ্ঠিত হয় । যারা শারীরি ক ও আর্থিকভাবে সক্ষম এবং যাদের অনপুস্থিতিতে তাদের পরিবারের ভরণ পোষণে কোন সমস্যা নাই, সে সমস্ত মুসলমানদের জন্য এটি ফরজ । প্রাপ্তবয়স্ক সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের জীবনে অন্তত একবার হজ্জ্ব করা ফরজ ।
হজ্জ্ব ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ, কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “ইসলাম পাঁচটি (স্তম্ভের) উপর নির্মিতঃ সাক্ষ্য দেওয়া হয় যে আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল, নিয়মিত সালাত কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, রমজানের রোজা রাখা এবং বায়াতুল্লাহর হজ্জ্ব করা ।” [সহীহ বুখারী ৮, সহীহ মুসলিম ১২০] মুসলমানের উচিত হজ্জ্বের ফরয পূরণে বিলম্ব না করা যখন তার উপর এটা ফরয হয়ে যায় ।
নিম্নলিখিত শর্ত পূরণ হলে হজ ফরজ হয়:
1- মুসলিম হওয়া।
2 – একজন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।
3 – সুস্থ মনের হওয়া।
4 – আর্থিক এবং শারীরিকভাবে সক্ষম হওয়া। একজন মহিলার ক্ষেত্রে এর মধ্যে মাহরাম থাকা অন্তর্ভুক্ত। যদি তার মাহরাম না থাকে তবে তার হজ করা বাধ্যতামূলক নয়।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশে হজ্জ্ব করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত থাকলো, সে ঐ দিনের মত নিষ্পাপ হয়ে হজ্জ্ব থেকে ফিরে যাবে যেদিন তাকে তার মা জন্ম দিয়েছিল ।” [বুখারি ১৫২১ এবং মুসলিম ১৩৫০] রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “জান্নাতই হল হাজ্জ্বে মাবরূরের প্রতি দান ।” [বুখারি ১৭৭৩ এবং মুসলিম ১৩৪৯] নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “তোমরা হজ্জ্বের পর উমরা এবং উমরার পর হজ্জ্ব করবে , কেননা তা অভাব অনটন ও পাপকে দূর করে দেয় যেমন হাপর লোহার মরিচা দূর করে থাকে ।” [তিরমিযী ৭৩৮ এবং নাসায়ী ২৬৩১]
হজ্জ্বের উপকারিতা অপরিসীম; তাদের মধ্যে কিছু নিম্নরূপ:
আমাদের আন্তরিক উদ্দেশ্য হতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ্জ্ব করা এবং নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ভাবে হজ্জ্ব করেছেন, সে ভাবে তা পালন করা । আমাদের মনে রাখতে হবে যে , কোন সৎ কাজ কবুল হবে না যতক্ষণ না নিয়তের আন্তরিকতা ঠিক থাকে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ অনসুরণ করা হয় । হালাল উপার্জন দিয়ে হজ্জ্ব করতে হবে । হজ্জ্ব হচ্ছে চরিত্রের একটি বিশাল পরীক্ষা, বিশেষ করে ধৈর্য্যের । বিনয়ী Ŵহvন, ইতি বাচক মনোভাব ও সঠিক মানসিকতা রাখুন । আমাদের উচিত হজ্জ্বের ব্যাপকতা এবং বাস্তবতা বোঝার চেষ্টা করা যেখানে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ একই সময়ে এবং একই জায়গায় এই ইবাদত পালন করে । মনে রাখবেন, এটি কোন বার্ষিক ছুটি নয় বরং একটি ইবাদত ।