ঐতিহাসিক মসজিদ আল-ইজাবা; যেই মসজিদে রাসূল ﷺ এর ২টি দোয়া কবুল হলেও ১টি হয়নি
…
ছবিতে যেই মসজিদটি দেখছেন এটি ঐতিহাসিক মসজিদ আল-ইজাবা বা দোয়া কবুলের মসজিদ। মসজিদে নববীর কাছেই দোয়া কবুলের পবিত্র এই মসজিদটি অবস্থিত। এই মসজিদটি বনি মুয়াবিয়া বা আল-মুবাহালাহ নামেও সমধিক পরিচিত। আল্লাহ দরবারে দোয়া কবুল হওয়ার কারণে এই মসজিদটি আল-ইজাবা বা দোয়া কবুলের মসজিদ হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। ঐতিহাসিক এই মসজিদের জায়গাটির মালিক ছিলেন মদিনার আল-আওস গোত্রের হজরত মুয়াবিয়া ইবনে মালিক ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু।
ঐতিহাসিক পবিত্র মসজিদটি প্রসিদ্ধ হওয়ার কারণ একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ এই মসজিদে এসে বসে পিয়ারা উম্মতের জন্য আল্লাহর কাছে ৩টি দোয়া করেছিলেন। যার মধ্যে ২টি দোয়া কবুল হয়েছিল। আর তাহলো- > প্রিয় রাসূল ﷺ এর গোটা উম্মত যেন দুর্ভিক্ষ বা মহামারীতে ধ্বংস হয়ে না যায়। > গোটা উম্মত যেন পানিতে ডুবে ধ্বংস হয়ে না যায়। এ দোয়া দু’টি আল্লাহ কবুল করে করেছিলেন। আর তৃতীয় দোয়াটি ছিল- – উম্মতে মুহাম্মাদি যেন আত্মকলহ তথা মারামারি হানাহানিতে কখনো লিপ্ত না হয়। যেই দোয়াটি আল্লাহ কবুল করেননি।
হাদিসে ঘটনাটি এভাবে এসেছে- হজরত আমির বিন সাদারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আল-আলিয়াহ থেকে ফেরার পথে বনি মুয়াবিয়া মসজিদের ঠিক কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। অতঃপর তিনি এই মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং ২ রাকাআত নামাজ আদায় করলেন। প্রিয়নবির সঙ্গী সাহাবিরাও তাঁর অনুসরণ করলেন। প্রিয়নবি দীর্ঘ সময় ধরে দোয়া করলেন। দোয়া করে প্রিয়নবি সঙ্গীদের কাছে ফিরে এসে বললেন যে, তিনি আল্লাহর কাছে ৩টি দোয়া করেছেন। যার দুটি দুর্ভিক্ষ, মহামারির ভয়াবহতা ও পানিতে ডুবে মারা যাওয়া থেকে হেফাজতের দোয়া আল্লাহ গ্রহণ করেছেন।
আর আত্ম-কলহ বন্ধের বিষয়ে করা দোয়াটি আল্লাহ কবুল করেনি।’ (মুসলিম)। প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ, অপবাদ, দ্বন্দ্ব কেয়ামত পর্যন্ত চলবে। মানুষ সৃষ্টিলগ্ন থেকে এসব কাজে অভ্যস্ত। এসব যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে মানুষ ফেরেশতা হয়ে যাবে। ঐতিহাসিক এই মসজিদটির অবস্থান জান্নাতুল বাকির ৩৮৫ মিটার দক্ষিণে আস-সিত্তিন স্ট্রীটে। মসজিদে নববি থেকে এ মসজিদের দূরুত্ব মাত্র ৫৮০ মিটার। ওমরা ও হজ পালনকারী দর্শনার্থীরা মসজিদ আল-ইজাবা বা দোয়া কবুলের মসজিদ নামে খ্যাত এই পবিত্র মসজিদে গিয়ে নিজেদের জন্য এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহ”র জন্য প্রতিনিয়ত দোয়া করে থাকেন।